মেডিটেশন ও অবচেতন মন
আগেই বলেছি চেতন মন যুক্তি নির্ভর, তার বুদ্ধি-বিবেচনা আছে। সে বুঝতে পারে কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা, কোনটা ন্যায়, কোনটা অন্যায় ইত্যাদি।
অবচেতন মন সম্পূর্ণভাবে বিচার শক্তিহীন মন। অবচেতন মনের কাজ হলো বিনা দ্বিধায়, যুক্তি ছাড়া সব মেনে নেয়া এবং আপত্তিতে সব কিছু পালন করা।
যদি কোনো প্রকারে চেতন মনের ক্রিয়াকে বন্ধ করে দেয়া যায় তখনই অবচেতন মনের কার্যকারিতা জাগ্রত হতে থাকে এবং তাকে যা বলা হবে তাই মেনে নিয়ে আপনাকে সেই ভাবে পরিচালিত করবে।
মেডিটেশনের মাধ্যমে অবচেতন মনকে কীভাবে জাগ্রত করবেন সেই পদ্ধতি এবারে বলছি।
- মেডিটেশনের জন্য পূর্বশর্ত হলো আসন। আপনি চেয়ারে বা মেঝেতে বসে, যে ভাবে আপনার সুবিধা হয় মেডিটেশন করতে পারেন।
- মেরুদন্ড সোজা রাখুন
- দুই হাত উপুর করে দুই থাই-এর উপর রাখুন।
- হালকাভাবে চোখ বন্ধ করুন। চোখে কোনো চশমা থাকবে না।
- তিনবার ডিপ ব্রিদিং নিন (স্বাভাবিক শ্বাস-এর চেয়ে একটু জোরে গভীর ভাবে বুক পর্যন- শ্বাস টেনে নিতে হবে এবং একটু বেশি সময় নিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে থাকুন, এই পদ্ধতিকে বলে ডিপ ব্রিদিং। ডিপ ব্রিদিং-এর ক্ষেত্রে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হবে এবং নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। কখনও মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়বেন না, তাহলে আপনার উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হবে।
- তিন বার ডিপ ব্রিদিং শেষ করে স্বাভাবিক শ্বাস নিতে থাকুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস-এর দিকে খেয়ালকে ধরে রাখুন। (খেয়ালকে ধরে রাখুন বলতে, শ্বাস নিচ্ছেন তার ফলে নাকের অগ্রভাগে কী অনুভূতি হচ্ছে এবং শ্বাস ছাড়ছেন নাকের অগ্রভাগে কী অনুভূতি হচ্ছে তাই বোঝান হয়েছে)
- কোনো প্রকার সাংসারিক বা বৈবাহিক চিন-া মাথায় আনবেন না, শুধুমাত্র স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে খেয়ালকে ধরে রাখুন।
- কিছুক্ষণ পরে অনুভব হবে যে আপনি পৃথিবীর সব কিছু থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন এবং ক্রমেই মন শান- হচ্ছে।
- ধ্যানস’ অবস’ায় আপনার এই অনুভূতি যখন হবে তখন বুঝতে হবে যে আপনার অবচেতন মন জাগ্রত হচ্ছে।
- এই অবস’ায় যতক্ষণ ইচ্ছা হয় থাকুন। প্রাথমিক অবস’ায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট, তারপর ধীরে ধীরে সময় বাড়ান।
- এরপর ধীরে ধীরে চোখ খুলে ৩ থেকে ৫ মিনিট চুপচাপ বসে থাকুন তারপর স্বাভাবিক কাজ কর্মে ফিরে যান।
এতক্ষণ যে মেডিটেশন চর্চার পদ্ধতি বললাম, তা যদি নিয়মিত চর্চা করেন তাহলে আপনার অবচেতন মন জাগ্রত হবে। এ ছাড়া ব্লাড প্রেসার নরমাল থাকবে। ব্লাড সার্কুলেশন ইমপ্রুভ হবে, হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। শরীরের টিসুকে রিলাক্স করে মাথাব্যথা কমিয়ে দেয়। মসি-ষ্কে সেরোটনিন-এর বৃদ্ধি ঘটে ফলে ডিপ্রেশন, ইনসোমনিয়া দূর হয়।
কিছুটা সময় মেডিটেশনের জন্য ব্যয় করুন
নিজে ভালো থাকুন অপরকে ভালো রাখুন।
এই লেখাটি সম্পূর্ণ ক্রিয়েটিভ মেডিটেশন সাইট থেকে কপি করা
0 comments:
Post a Comment